স্বাভাবিক সংখ্যার প্যাটার্ন

অষ্টম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - গণিত - প্যাটার্ন | NCTB BOOK

মৌলিক সংখ্যা নির্ণয়

আমরা জানি যে, ১-এর চেয়ে বড় যে সব সংখ্যার ১ ও সংখ্যাটি ছাড়া অন্য কোনো গুণনীয়ক নেই, সেগুলো মৌলিক সংখ্যা। ইরাটোস্থিনিস (Eratosthenes) ছাঁকনির সাহায্যে সহজেই মৌলিক সংখ্যা নির্ণয় করা যায়। ১ থেকে ১০০ পর্যন্ত স্বাভাবিক সংখ্যাগুলো একটি চার্টে লিখি। এবার সবচেয়ে ছোট মৌলিক সংখ্যা ২ চিহ্নিত করি এবং এর গুণিতকগুলো কেটে দেই। এরপর ক্রমান্বয়ে ৩, ৫ এবং ৭ ইত্যাদি মৌলিক সংখ্যার গুণিতকগুলো কেটে দিই । তালিকায় যে সংখ্যাগুলো টিকে রইল সেগুলো মৌলিক সংখ্যা।

 

সংখ্যা শ্রেণির নির্দিষ্ট সংখ্যা নির্ণয়

উদাহরণ ১। সংখ্যাগুলোর পরবর্তী দুইটি সংখ্যা নির্ণয় কর : ৩, ১০, ১৭, ২৪, ৩১, ....

সমাধান : প্রদত্ত সংখ্যাগুলো

   পাশাপাশি দুইটি সংখ্যার পার্থক্য

লক্ষ করি, প্রতিবার পার্থক্য ৭। অতএব, পরবর্তী দুইটি সংখ্যা হবে যথাক্রমে ৩১+৭ = ৩৮ ও ৩৮+৭ =৪৫।

 

উদাহরণ ২। সংখ্যাগুলোর পরবর্তী সংখ্যাটি নির্ণয় কর: ১, ৪, ৯, ১৬, ২৫, ...

সমাধান : প্রদত্ত সংখ্যাগুলো

     পাশাপাশি দুইটি সংখ্যার পার্থক্য

লক্ষ করি, প্রতিবার পার্থক্য ২ করে বাড়ছে । অতএব, পরবর্তী সংখ্যা হবে ২৫ + (৯ + ২) = ২৫ + ১১ = ৩৬।

 

উদাহরণ ৩। সংখ্যাগুলোর পরবর্তী সংখ্যাটি নির্ণয় কর : ১, ৫, ৬, ১১, ১৭, ২৮, ....

সমাধান : প্রদত্ত সংখ্যাগুলো

     পাশাপাশি দুইটি সংখ্যার যোগফল

প্রদত্ত সংখ্যাগুলো একটি প্যাটার্নে লেখা হয়েছে । পরপর দুইটি সংখ্যার যোগফল পরবর্তী সংখ্যাটির সমান । অতএব, পরবর্তী সংখ্যাটি হবে ১৭ + ২৮ = ৪৫।

কাজ :

১। ০, ১, ১, ২, ৩, ৫, ৮, ১৩, ২১, ৩৪, ….. সংখ্যাগুলোকে ফিবোনাক্কি সংখ্যা বলা হয়। সংখ্যাগুলোতে কোনো প্যাটার্ন দেখতে পাও কি ?

লক্ষ কর : ২ পাওয়া যায় এর পূর্ববর্তী দুইটি সংখ্যা যোগ করে (১+১)

          ৩    ''    ''    ''    ''   দুইটি     ''    ''    ''    ''     (১+২)

          ২১    ''    ''    ''    ''   দুইটি     ''    ''    ''    ''     (৮+১৩)

পরবর্তী দশটি ফিবোনাক্কি সংখ্যা বের কর।

 

স্বাভাবিক ক্রমিক সংখ্যার যোগফল নির্ণয়

স্বাভাবিক ক্রমিক সংখ্যার যোগফল বের করার একটি চমৎকার সূত্র রয়েছে। আমরা সহজেই সূত্রটি বের করতে পারি।
মনে করি, ১ থেকে ১০ পর্যন্ত ক্রমিক স্বাভাবিক সংখ্যাগুলোর যোগফল ক।

                                               অর্থাৎ,ক = ১ + ২ + ৩ + 4 + 5 + 6 + ৭ + ৮ + ৯ + ১০

লক্ষ করি, প্রথম ও শেষ পদের যোগফল ১ + ১০ = ১১, দ্বিতীয় ও শেষ পদের আগের পদের যোগফলও ২ + ৯ = ১১ ইত্যাদি। একই যোগফলের প্যাটার্ন অনুসরণ করে ৫ জোড়া সংখ্যা পাওয়া গেল। সুতরাং যোগফল ১১ × ৫ = ৫৫। এ থেকে স্বাভাবিক ক্রমিক সংখ্যার যোগফল বের করার একটি কৌশল পাওয়া গেল।

কৌশলটি হলো :
প্রদত্ত যোগফলের সাথে সংখ্যাগুলো বিপরীত ক্রমে লিখে যোগ করে পাই

কাজ :
১ থেকে ১৫ পর্যন্ত ক্রমিক স্বাভাবিক সংখ্যাগুলোর যোগফল বের করে সূত্র প্রতিষ্ঠা কর।

 

প্রথম দশটি বিজোড় সংখ্যার যোগফল নির্ণয়

প্রথম দশটি বিজোড় সংখ্যার যোগফল কত? ক্যালকুলেটরের সাহায্যে সহজেই যোগফল পাই, ১০০। ১+৩+৫+৭+৯+১১ + ১৩ + ১৫ + ১৭ + ১৯ = 100

এভাবে প্রথম পঞ্চাশটি বিজোড় সংখ্যার যোগফল বের করা সহজ হবে না। বরং এ ধরনের যোগফল নির্ণয়ের জন্য কার্যকর গাণিতিক সূত্র তৈরি করি । ১ থেকে ১৯ পর্যন্ত বিজোড় সংখ্যাগুলো লক্ষ করলে দেখা যায়, ১ + ১৯ = ২০, ৩ + ১৭ = ২০, ৫ + ১৫ = ২০ ইত্যাদি। এরকম ৫ জোড়া সংখ্যা পাওয়া যায় যাদের প্রত্যেক জোড়ার যোগফল ২০। সুতরাং, সংখ্যা গুলোর যোগফল ৫ × ২০ = ১০০
আমরা লক্ষ করি,

                                                            ১ + ৩ = ৪,               একটি পূর্ণবর্গ সংখ্যা
                                                            ১ + ৩ + ৫ = ৯,       একটি পূর্ণবর্গ সংখ্যা
                                                            ১+৩+৫+৭ = ১৬,    একটি পূর্ণবর্গ সংখ্যা, ইত্যাদি।

প্রতিবার যোগফল একটি পূর্ণবর্গ সংখ্যা পাচ্ছি। বিষয়টি জ্যামিতিক প্যাটার্ন হিসেবে সহজেই ব্যাখ্যা করা যায়। ক্ষুদ্রাকৃতির বর্গের সাহায্যে এই যোগফলের প্যাটার্ন লক্ষ করি।

দেখা যাচ্ছে যে প্রথম দুইটি ক্রমিক বিজোড় সংখ্যার যোগের বেলায় প্রত্যেক পাশে ২টি করে ছোট বর্গ বসানো হয়েছে। আবার, প্রথম তিনটি ক্রমিক বিজোড় সংখ্যা যোগের বেলায় প্রত্যেক পাশে ৩টি ছোট বর্গ বসানো হয়েছে। সুতরাং, ১০টি ক্রমিক বিজোড় সংখ্যা যোগ করলে চিত্রের প্রত্যেক পাশে ১০টি ছোট বর্গ থাকবে। অর্থাৎ, ১০ x ১০ = ১০২ বা ১০০টি বর্গের প্রয়োজন হবে। সাধারণভাবে বলা যায় যে, 'ক' সংখ্যক ক্রমিক স্বাভাবিক বিজোড় সংখ্যার যোগফল কই।

কাজ :
১। যোগফল বের কর: ১+৪+৭+১০+ ১৩ + ১৬ + ১৯ + ২২ + ২৫ + ২৮ + ৩১
Content added || updated By

আরও দেখুন...

Promotion